পর্ব-১: মুখবন্ধ
‘দন্ডিতের সাথে দন্ডদাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে সেইতো উৎকৃষ্ট বিচার’- এই সূত্র ধরে সালিশ বা বিচারের উদ্দেশ্য দাঁড়ায় দু’টি পক্ষের মধ্যে উদ্ভূত বিবদমান সমস্যা এমনভাবে নিরসন করা যাতে একই ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে এবং উভয়পক্ষ ভবিষ্যত জীবনে একে অন্যের হাত ধরাধরি করে চলতে পারে।
সালিশকারী কিংবা বিচারকের অজ্ঞানতা, পারিবারিক বা গ্রামীণ পুরনো দলাদলি, স্বজনপ্রীতি কিংবা ঘুষ বা উপঢৌকনের বদৌলতে কিংবা অন্য যেকোন কারনেই হোক না কেন সালিশের উপরোল্লিখিত উদ্দেশ্য যদি ব্যাহত হয় সেক্ষেত্রে সালিশ পরবর্তী সময়ে সমাজে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয় এবং যার ফলে একটি সমাজের সার্বিক অগ্রগতি ও উন্নয়ন যেভাবে ব্যাহত হয় তার দায় উপস্থিত সালিশকারী এবং বৃহদার্থে দেশের আইন-ব্যবস্থাও এড়াতে পারে না।
ভুলে গেলে চলবে না, অধিকাংশ গ্রামীণ সালিশের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সালিশকারীর অযোগ্যতা এবং অপরাধ-প্রবনতাজনিত কারনে সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সালিশ পরিচালনা করতে ব্যর্থ হওয়ায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিততো হয়ই না বরং বিবদমান উভয়পক্ষের একরোখা সমর্থকগোষ্ঠীর মধ্যে সে বিষ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে, মারামারি, হত্যাচেষ্টা, হত্যা এমনকি আত্মহত্যার মতো ঘটনা পর্যন্ত ঘটে থাকে। যার পরিণতিতে গোটা সমাজের মানুষ নিরাপত্তাহীনতা এবং সংকটে আবর্তিত হয়। যা শেষপর্যন্ত জাতীয় উন্নয়নকেই বাধাগ্রস্ত করে ভয়াবহরকম।
সবচেয়ে বিপদজনক ভয় হচ্ছে, আধিপত্য বিস্তার এবং ক্ষমতা প্রদর্শন লাভে নিজেদের অবৈধ কর্মকান্ডকে সমাজস্বীকৃত করতে প্রায় প্রতিটি গ্রামেই নিয়মিতভাবে সমস্যা সৃষ্টি করে যারা, তারাই আবার সমস্যাটি মীমাংসার জন্য উঠেপড়ে লাগে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, গ্রামীন সালিশে আস্থা না থাকায় যে অভিযোগটি পুলিশ পর্যন্ত যায় সেখান থেকেও তারা বিষয়টি ছিনিয়ে নিয়ে আসে নিজেদের করায়ত্বে। পরে শুরু হয় ‘ভিলেজ-পলিটিক্স’ এর লজ্জাজনক টালবাহানা। টালবাহানা এইজন্যেই যে, সালিশটি হয়ে গেলেইতো সালিশকারীর গ্রহনযোগ্যতায় ভাঁটা। ফলে, ব্যবসায় ক্ষতি।
অতএব, শান্তিপ্রিয় গ্রামীণ জনপদে বিশৃংখলা জিইয়ে রেখে গুটিকয়েকের নষ্ট-স্বার্থ যাতে আর চরিতার্থ না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনকি প্রতিটি সচেতন নাগরিককে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতেই হবে।
(পরবর্তী পর্ব আগামী সপ্তাহে প্রকাশিত হবে)
লেখক: অসীম রায়
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা,
শিক্ষার্থী সমাবেশ, বাংলাদেশ।
সম্পর্কিত সংবাদ
ভালুকায় হারিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ফুল শাপলা
বাংলাদেশের দালাল – তারেক চৌধুরী
পাহাড়ি মাল্টা সমতলে- ময়মনসিংহে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের চমক!